আবদুর রশীদ চৌধুরী ও স্ত্রী কবি তাছলিমা চৌধুরী ওমরা পালনে- সকলের দোয়া কামনা

kushtiatvkushtiatv
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  05:43 PM, 06 April 2022

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়া সিনিয়র সাংবাদিক- কবি আবদুর রশীদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী কবি তাছলিমা চৌধুরী বুলবুল ৬ ই এপ্রিল ২০২২ বুধবার ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করছেন। তারা ওমরা শেষ করে বাড়ি ফিরবেন আগামী ১৮ এপ্রিল।

দু‘জনই সু প্রতিষ্ঠিত কবি, সংবাদপত্রসেবী, সমাজসেবক, সাংস্কৃতিক সংগঠক এবং পারিবারিক জীবনে সফল ও আদর্শ জুটি। তাদের বড় মেয়ে শাহরীন তামান্নু চৌধুরী রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ছিলেন বর্তমানে ঢাকাতে ব্যবসা করছেন, ছোট মেয়ে নওরোজ তামান্নু চৌধুরী স্বামীসহ অষ্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। একমাত্র পুত্র প্রকৌশলী তাসলিমুর রশীদ চৌধুরী হলিউডে সস্ত্রীক কর্মরত। তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন মজমপুর, কুষ্টিয়ায়।
আবদুর রশীদ চৌধুরী : তিনি বিশিষ্ট সাংবাদিক, কবি, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সমাজ সেবক। বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার সাংবাদিকতার অগ্রপথিক আবদুর রশীদ চৌধুরী। প্রবীণ এই সাংবাদিক ১৯৪৫ সালের ১৬ নভেম্বর তৎকালীন নদীয়া তথা কু্ষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিআইবি প্রকাশিত সাংবাদিক অভিধানে কুষ্টিয়া জেলার একমাত্র জীবিত সাংবাদিক হিসেবে তাঁর নাম অন্তভূক্ত রয়েছে।এ অঞ্চলে সাংবাদিকতা ও সমাজসেবার ক্ষেত্রে আবদুর রশীদ চৌধুরী দীর্ঘ চার দশক ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। তার সম্পাদিত দৈনিক বাংলাদেশ বার্তা এই অঞ্চলের সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি সহ সকল ক্ষেত্রের অন্যতম প্রধান মুখপত্র হিসেবে দীর্ঘকাল ধরে এলাকার সাথে কাজ করে চলেছে।
তিনি সাংবাদিকতার পাশাপাশি একজন কবি, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সমাজ সেবক হিসেবেও পরিচিত । তিনি বৃহত্তর কুষ্টিয়া থেকে প্রথম প্রকাশিত দৈনিক বাংলাদেশ বার্তা, সাপ্তাহিক জাগরনী ও দি বাংলাদেশ রিভিউ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। এছাড়াও প্রায় ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে ‘দৈনিক সংবাদ’- এ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন। ইলেকট্রনিক মিডিয়া তথা তিন দশকের বেশী সময় যাবত বাংলাদেশ টেলিভিশনে কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া দীর্ঘকাল ধরে কবিতা রচনা করে আসছেন। তাঁর কাব্য গ্রন্থঃ নির্জনে আমি একা; প্রেক্ষিতে মুখর নদী, আয়নায় নিসর্গ রমণ (সম্পাদিত) ও কলকাতা থেকে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তোমার মনকে ছোঁব একদিন’।
তিনি বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের নির্বাহী সদস্য। এ অঞ্চলে সাংবাদিকতা ও সমাজসেবার ক্ষেত্রে আবদুর রশীদ চৌধুরী দীর্ঘ চার দশক ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
তিনি কুষ্টিয়া লায়ন্স ক্লাবের জেলা সভাপতি ছিলেন। কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি ও কুষ্টিয়া ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি ঐতিহ্য পরিষদ কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক, জাগরনী প্রকাশনির স্বত্ত্বাধিকারী ও জাগরনী সাহিত্য সংসদের সভাপতি। তিনি কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নির্বাচিত সহ সভাপতি,কুষ্টিয়া লালন একাডেমীর সাবেক সহ সভাপতি। তিনি নজরুল একাডেমি, কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি।
তিনি সাংবাদিকতায় কবি জসিম উদ্দিন পদক সহ ৩০টি পদক ছাড়াও ভারত থেকে পঁচিশটি পদক পান। স্থানীয়ভাবে ঢাকাস্থ কুষ্টিয়া জেলা সমিতি, কুষ্টিয়া জেসিস ক্লাব, হাজি মোকাদ্দেস ফাউন্ডেশন মেধা, ড. আলাউদ্দিন আহম্মেদ ফাউন্ডেশন পদক, উত্তরবঙ্গ সাংস্কৃতিক সংঘ পদক ছাড়াও ৩০ট পদক পেয়েছেন। সাংবাদিকতা ও সমাজ সেবায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য দেশে ও দেশের বাইরে তাঁকে অন্ততঃ ২৫টি সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়।
তিনি একজন চিত্রশিল্পী ও এক্ষেত্রে তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা আর্ট কলেজ থেকে বিএফ এ ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ভারত থেকে ডিপ্লোমা ইনজার্নালিজম লাভ করেন।
তাছলিমা চৌধুরী বুলবুল:তিনি মূলত রোমান্টিক মানস-প্রবণতার কবি। তার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ইচ্ছার অনুরাগে’ এবং প্রথম কাব্যগ্রন্থ নদী তুমি আমার’। তার কবিতায় সমাজ-মনস্কতা প্রখর ও স্পষ্ট।
সাহিত্য চর্চা ছাড়াও সাহিত্য সম্পাদনা ও সমাজসেবার কাজে তিনি ব্যাপৃত। তিনি সাহিত্য সাময়িকী ‘মাসিক অভিষেক’, সাপ্তাহিক জাগরণী’ ও ‘নন্দন-এর সম্পাদক এবং বৃহত্তর কুষ্টিয়ার প্রথম দৈনিক পত্রিকা ‘দৈনিক বাংলাদেশ বার্তা-এর সফল সাহিত্য সম্পাদক। তার সম্পাদিত এই সাহিত্য পেজ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি-সাহিত্যিকরা এখানে লেখালেখি করেন। পাশাপাশি প্রতিভাবান নবাগত কবি-সাহিত্যিকদের লেখা প্রকাশ করা হয়। দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তার কবিতা নিয়মিত প্রকাশ পেয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠন ও সমাজমূলক সংস্থার তিনি সাধারণ ও আজীবন সদস্য ও কর্মকর্তা।
সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য পাবনার ‘বাংলাদেশ কবিতা সংসদ’ ১৪০৮ বঙ্গাব্দে ‘বাংলা সাহিত্য পদক’ লাভ করেন এবং ২০০৭ সালে খুলনার একুশে বইমেলায় তাকে গুণীজন সংবর্ধনা ও পদক দেয়া হয়।২০১৬ সালে লালমণিরহাটে “গঙ্গা-গোবিন্দ স্মৃতি পরিষদ” দুই বাংলার সাহিত্যকর্মীদের নিয়ে কবিতা আড্ডা ও সংবর্ধনা এবং সম্মাননা প্রদানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে কবি তাছলিমা চৌধুরী বুলবুল ও কবি আবদুর রশীদ চৌধুরী সম্মাননাপ্রাপ্ত হন।

আপনার মতামত লিখুন :