আব্দালপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসে ঘুষ বিহীন সেবা বিলম্ব ! আতংকে সেবা গ্রহীতারা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আজ ১১ই এপ্রিল ২০২২ সোমবার সকাল দশটায় আব্দালপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসে গিয়ে দেখি একজন অফিস সহকারি ও এক জন ক্লিনার মহিলা। অফিসের বারান্দায় বসে আছেন দুই জন সেবা গ্রহিতা। তারা জমির খাজনা ও নাম খারিজ করার জন্য নযটা থেকে বসে আছেন। অফিস সহকারি আ: বারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কি করবো, স্যার সকল খাতা পত্র স্টোর রুমে আটকে রেখে চলে যান। স্যার আসলে আমি মানুষের কাজ করি আর না আসলে বসে বসে মশা – মাছি মারি। আরও বলেন স্যার মাঝে মধ্যে দেরি করে আসে কিন্তু আমরা দুই জন ঠিক সময় মতো উপস্থিত হই। পকেটের টাকা খরচ করে প্রতিদিন অফিস করি লোকের কাগজ পত্র তাড়াতাড়ি করে দিলেও কেউ ২০/৫০ টাকা দেইনা। অথচ আমি ১৯৮৯ সালে চাকুরী শুরু করে আজ পর্যন্ত হালাল পথে জীবন যাপন করছি। অন্য আমার বন্ধুদের মত জমি ও বাড়ির মালিক হতে পারি নাই।
১১ টার পরে ভূমি কর্মকর্তা অফিসে আসলেন এর মধ্যে আরও ৫/৬ জন লোক এসে অপেক্ষা করতে দেখলাম। স্যার অফিস খুললেন এবং ক্লিনার মহিলা অফিস রুম পরিষ্কার করা শেষে স্যার অফিসে বসে কাজ শুরু করলেন। এবার অপেক্ষমান সবার অভিযোগ আর কতদিন কাজ বন্ধ করে আপনার অফিসে আসব। আমার কাজ আগে না ওর কাজ আগে তা নির্ভর করে টাকার উপর। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের – ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমি আমার সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কে আমার ব্যাপারে কি বলে আমার জানার দরকার নেই। আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত।অফিসের সকল মালামালের দায়িত্ব আমার তাই আমি কোন কাগজ পত্র বাহিরে রাখি না। অফিসে সেবা নিতে আসলে ২/১ দিন দেরি হবেই। আর আমি অফিসে আসার আগে অন্যান্য অফিসের কাজ শেষ করে আসার জন্য মাঝে মাঝে দেরী হয়। মজিবর লাট ও রিপন জিজ্ঞাসা করেন স্যার ১৮ দাখিলা কাটতে আপনি ১৮০০০ টাকা চাওয়ার কারণে কুষ্টিয়া এসিল্যান্ড স্যারের কাছে গিয়েছিলাম, স্যার আপনাকে ফোন দিয়েছিলেন এখন বলেন কতটাকা লাগবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সবার সামনে হিসাব করে বল্লেন ১০৫০ টাকা দিবেন এবং ১৩ তারিখ বুধবার ৩ টার দিকে এসে আপনার কাগজ নিয়ে যাবেন। এই গেল একটা ঘটনা আর যারা কুষ্টিয়া এসিল্যান্ড অফিস চিনে না বা আসে না তাদেরতো ঠিকই অতিরিক্ত টাকা দিয়েই কাজ করতে হয়। টাকা না দিলে কাজ করে না ও অনেক দিন ঘুরানোর অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সাহাজ উদ্দিন ও ইব্রাহিম, সাং লক্ষীপুর। বিশারত দরগা পাড়া ।জালাল উদ্দিন সহ পিয়ার পুর ও ডেইরি পাড়ার কয়েক জন। এ ব্যাপারে আব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলী হায়দার স্বপন মাস্টার বলেন, ভূমি কর্মকর্তা মিজান সাহেব আসার পর অনেকেই আমার কাছে আসে উনি নাকি সেবা গ্রহিতাদের সেবা দিতে বিলম্ব করছেন। এ ব্যাপারে আমি উনাকে বলেছি আমি জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধি আপনি আপনার দায়িত্ব সুন্দর ভাবে পালন করবেন। আপনি আমার অধিনস্হ নন। আপনার ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি এবং তাদেরকে বলেছি আপনারা ৪/৫ মিলে একটা দরখাস্ত লিখে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্যার কে দিলে স্যার অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
আব্দালপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এর আগে ছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোস্বামীদূর্গাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস। সেখানে ছিলেন দীর্ঘ সময়। উল্লেখ্য তার বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়ন এর বৈদ্দনাথ পুর গ্রামে। চাকরির বয়স ১৮ বছর হলেও কাজ কর্ম বোঝে কম। যেখানেই থাকে সেই ইউনিয়নের সেবা গ্রহিতাদের অভিশাপ ও অভিযোগ থাকেই, এমনটাই মতামত জানালেন সেবা নিতে আসা গ্রহীতারা।
এই বিষয়ে ভালো মনের মানুষ সদা মিষ্ট ভাষী দবির উদ্দিন, সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কুষ্টিয়া সদর কুষ্টিয়া বলেন, আমার অফিস সম্পূর্ণ দুর্নীতি মুক্ত। আমি যতদিন আমার দায়িত্ব পালন করব সেটা যেন অবশ্যই সৎ ভাবে ও মানুষের মনে থাকে। নি:স্বার্থ ভাবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য আমি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে যাব ইনশাআল্লাহ। কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না। আমার অধিনে কেউ দুর্নীতি ও অন্যায় করলে অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত সময়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।