ইবিতে জনসম্মুখে শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত
মো:সাব্বির খান, ইবিঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে শহীদ জিয়াউর রহমান হল ও শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুফতাঈন আহমেদ সাবিককে জনসম্মুখে হাতে ছুরিকাঘাত করা হয় এবং সাবিককে চিকিৎসার জন্য ইবি চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ব্যবস্থাপনা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের আকিব ছুরিকাঘাত করেছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতের বিষয়টি ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত দুজনই গোপন রেখেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ শীর্ষক আলোচনা সভা চলাকালে মিলনায়তনে ঢুকতে গিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় আইন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ ও জিয়া হলের শিক্ষার্থী শামীম ও শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থী ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আশিক কোরাইশির মধ্যে। পরে এ ঘটনার জেরে আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তনের বাহিরে এসে ফের উভয়ের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জিয়া হল ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে বঙ্গবন্ধু হল ও লালন শাহ হলের ছাত্রলীগ কর্মীরাও জড়িয়ে যায়।
এসময় লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আলাল ইবনে জয় (বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক ভাবে বহিস্কৃত) এবং তার সঙ্গীরা জিয়া হল শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয় ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে জানা গেছে। পরে দুই দ্রুপের হাতাহাতির পর সাবিককে জখম করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সমাধান করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়।
সাবিক বলেন, কিছু সংখ্যক ছেলেরা মারামারি করতেছিলো। এসময় আমি তাদেরকে ঠেকাতে গেলে আমাকে আঘাত করা হয়। গাছের ডালে লেগে আমার হাত কেটে গেছে ও এর বেশি আর বলতে চাচ্ছি না বলে কথা বিষয়টি গোপন করেন তিনি।
আকিব বলেন, আলোচনা সভা শেষে বাহিরে দেখি হুলুস্থুল অবস্থা বিরাজ করছে। পরে রাসেল হলের ছেলেরা আমাকেও মারধর করে। ওইসময় আমার জামা কাপড়ও ছিড়ে ফেলা হয়। এসময় তিনি ছুরিকাঘাতের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন।
এদিকে এ ঘটনায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আশিক কোরাইশির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আশিক কোরাইশির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আলোচনা সভা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এরপরে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। আজ সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবং যাদের অপরাধ প্রমাণিত হবে তাদেরকে তাৎক্ষণিক হল থেকে বের করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, মারামারির ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হয়েছি। এ ঘটনার কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।